একসময় যে কপোতাক্ষ নদ ছিল স্বচ্ছ পানির স্রোতস্বিনী, আজ তা বর্জ্য ও নিষিদ্ধ জালের কবলে ধুঁকছে। নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে বহু আগেই, নদজুড়ে এখন শুধু কচুরিপানা, ময়লার ভাগাড় আর পানিতে পোতা বাঁশের খুঁটি।
বিশ্ব নদী দিবস (২৮ সেপ্টেম্বর) উপলক্ষ্যে ঝিকরগাছা অংশে ঘুরে দেখা যায় নদীর এই করুণ চিত্র। ঝিকরগাছা, বাঁকড়া ও ছুটিপুর বাজারের সেতুর দুই পাশে নির্বিচারে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। বাঁকড়া বাজারের মাছ পট্টির নিচে নদকে বানানো হয়েছে বর্জ্যের ভাগাড়। ফলে ওই পথ দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচলও কঠিন হয়ে পড়েছে।
এক সময় ব্যাবসায়িক কাজে নদের বুক চিড়ে সহজেই পণ্য আনা-নেওয়া করতেন বণিকসহ স্থানীয়রা। নৌকা ও স্টিমারে যাতায়াত করতেন নদপাড়ের মানুষ। কিন্তু আজকের সেই কপোতাক্ষে স্রোত নেই, কোনো স্টিমার নেই। যশোরের ঝিকরগাছা অংশের কপোতাক্ষের তীর ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে অসাধুদের দখলে। উচ্চ আদালত দেশের সব নদ-নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে রায় দিলেও বর্জ্য আর দখলদারদের কবলে পড়ে এখন মৃতপ্রায় কপোতাক্ষ নদ। কোথাও কোথাও পরিণত হয়েছে মরা খালে। কিন্তু এ নিয়ে মাথা ব্যথা নেই প্রশাসনের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিকরগাছা বাজার, বাঁকড়া ও ছুটিপুর বাজারে কপোতাক্ষ নদের ওপর সেতুর দুপাশে বর্জ্য ফেলার কারণে ভরাট হতে চলেছে ঐতিহাসিক এ নদটি। উপজেলার বাঁকড়া বাজারের অধিকাংশ বর্জ্য ফেলা হয় কপোতাক্ষ নদে। বাঁকড়া বাজারের মাছ পট্টির নীচে ও সেতুর পশ্চিম পাশে বর্জ্যের ভাগাড় বানানো হয়েছে। বাঁকড়া বাজারের যত বর্জ্য তা সব মাছ পট্টির নিচে ফেলার কারণে ওই পথ দিয়ে লোকজনও চলাচল করতে পারেন না। তাছাড়া, মাদরাসা মার্কেটের পেছনেও নদে বর্জ্য ফেলা হয়।
মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়ে কারেন্ট ও ভেসাল জাল এবং চায়না দুয়ারি ব্যবহার নিষিদ্ধ। এ আইন অমান্যকারীর কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে। কিন্তু এ আইন লঙ্ঘন করে কপোতাক্ষ নদে উপজেলার বেজিয়াতলা ব্রিজ এলাকা থেকে সাদিপুর পর্যন্ত এসব জাল ও চায়না দুয়ারি পেতে মাছ ধরা হয়। পানিতে পোতা হয়েছে বাঁশের খুঁটি। মাছ ধরার জন্য কচুরিপানা আটকিয়ে রাখা হয়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই