রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক তিন মামলায় চতুর্থ দিনে পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত -৫-এর বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে সাক্ষীরা তাদের জবানবন্দি দেন৷ তবে মামলার আসামিরা পলাতক থাকায় সাক্ষীদের জেরা করা করতে পারেননি। মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সাক্ষীরা হলেন সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার রিয়াদ মাহমুদ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওসমান গনি, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রেজিস্ট্রার মিঠুন চন্দ্র বালা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রেজিস্ট্রার নাহিদ হোসেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রসিকিউটর খান মো. মঈনুল হাসান (লিপন) এসব তথ্য নিশ্চিত করেন৷ তিনি বলেন, আদালত থেকে পাঁচজন সাক্ষীকে সমন পাঠানো হয়েছিলে। ইতিমধ্যে এই সাক্ষীরা আদালতে এসেছেন এবং সাক্ষ্য দিয়েছেন।
গত ৩১ জুলাই এসব মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ গঠন শুনানির সময়ে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পৃথক তিন মামলার মধ্যে একটিতে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। অপর মামলায় শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনকে এবং অন্য আরেক মামলায় শেখ হাসিনা ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ২০ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এ তিনটি করে মোট ছয়টি মামলা বিচারের জন্য পাঠানো হয়।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপ-পরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ছয়টি মামলা করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। সম্প্রতি সবগুলো মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।