বিচ্ছেদ হতে পারে প্রেমের, অথবা সংসারের। আমরা না চাইলেও অনেক সম্পর্কের শেষ পরিণতি হয় বিচ্ছেদে। যদিও এই বিচ্ছেদ কারও কাম্য নয়। তবে সম্পর্কের টানাপোড়নে অনেক সময় বাধ্য হয়েই এই পথে হাঁটতে হয়। প্রেমে ছ্যাঁকা হোক বা সংসার ভাঙা হোক, এই ব্রেকআপের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া খুব কঠিন। কিন্তু কষ্ট হলেও নিজেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাই আসুন জেনে নিই বিচ্ছেদের পর নিজেকে সামলাবেন যেভাবে-
বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো
একা বসে থাকলেই স্মৃতি মনকে বিষন্ন করে তুলবে। সেই সময়ে আর ফিরবে না ভেবেই দুই চোখ ঝাপসা হয়ে উঠবে। তাই এই সময়টা যথা সম্ভব বন্ধু, আত্মীয়, প্রিয় মানুষদের সঙ্গে কাটানো দরকার। কোথাও বেরিয়ে আসা, সিনেমা দেখায় ব্যস্ত করে রাখলে খানিকটা সময় অতীতের স্মৃতি থেকে দূরে থাকা যাবে। তবে, বিষণ্ণ মনে এর কোনোটাই ভালো লাগতে নাও পারে। তবু বন্ধুদের সঙ্গে কষ্টের কথা শেয়ার করে নিলে মন হালকা লাগবে।
গান শোনা
গান শুনতে পারেন। কারণ জীবনের সকল পরিস্থিতির জন্যই উপযুক্ত গান রয়েছে। তবে প্রাক্তন সঙ্গীর কথা মনে করিয়ে দিতে পারে এমন গান শোনা থেকে বিরত থাকুন। বরং মন ভালো হয় এমন কিছু গান শুনুন।
নিজেকে বোঝানো
নিজেকে প্রশ্ন করা দরকার, যে মানুষটি কষ্ট দিলেন, তিনি সত্যি কি যোগ্য ছিলেন? তিনি কি সত্যি কোনোদিন ভালোবেসেছিলেন? যদি তা না-ই হয়, তাহলে এই চোখের পানি বা কষ্ট অর্থহীন। জীবনে আবার নতুন কেউ আসবেন। শুধু সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করা প্রয়োজন।
পছন্দের কাজগুলো করুন
নিজেকে ভালো রাখতে চাইলে পছন্দের কাজগুলো করতে পারেন। বই পড়া, খেলাধুলা, গান, সিনেমা দেখা– আপনি যা পছন্দ করেন, তা আবার শুরু করে দিন। তাহলেই দেখবেন পুরনো কথা মন থেকে ধীরে ধীরে সরে যাবে। এক সময় আপনি সবটা ভুলে যাবেন। আজ থেকেই তাই কাজে লেগে পড়ুন।
সামাজিক মাধ্যম থেকে দূরে রাখা
বিচ্ছেদের কষ্ট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলো সামাজিক মাধ্যম থেকে বেরিয়ে আসা। কিছুদিনের জন্য সেখান থেকে বিরতি নিন। এতে করে প্রাক্তন সঙ্গীর ছবি দেখা এবংতার দৈনন্দিন খবরগুলো জানার থেকে অন্তত মুক্তি মিলবে।
পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান
পরিবারের সদস্যরা কখনো আপনার খারাপ চাইবে না। তাই বিপদে কাউকে পাশে না থাকলেও এই মানুষগুলো দেখবেন ঠিকই আপনার সঙ্গে আছে। তাই মন খারাপ হলে তাঁদের কাছে ছুটে যান। আপনার খারাপ লাগা বিষয়গুলো শেয়ার করুন তাঁদের সঙ্গে। দেখবেন, আপনার মন অনেকটা হালকা হয়ে যাবে।
রোমান্টিক সিনেমা না দেখা
সিনেমা দেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া বা অনুমান করাও উচিত নয়। সকল হাসিখুশি দম্পতির প্রেমজীবন ঝামেলা মুক্ত নাও হতে পারে। বরং রোমাঞ্চকর, প্রামাণ্যচিত্র, এমনকি ভয়ের সিনেমাও দেখা যেতে পারে। এগুলো আপনার মনকে ব্যস্ত রেখে মন খারাপ করার চিন্তগুলো দূরে রাখবে।
অনুসরণকারী হওয়া যাবে না
প্রাক্তন সঙ্গীর একটি হাসিখুশি ছবিই আপনাকে আরও বিষাদগ্রস্ত করে তুলবে। তাই কোনো অবস্থাতেই প্রাক্তন সঙ্গীর দৈনন্দিন কার্যাবলী জানার উদ্দেশ্যে তাকে অনুসরণ করা যাবে না। প্রাক্তন সঙ্গী কী করছে, তার চাইতে নিজেকে নিয়ে চিন্তা করা বেশি জরুরি।
কান্নাকাটি অস্বাভাবিক নয়
বিচ্ছেদের মানেই অনুভূতির আচমকা পরিবর্তন। এ পরিবর্তনকে জোর করে চাপিয়ে রাখা যাবে না। বিচ্ছেদের পর প্রয়োজনে কান্নাকাটি করুন। চিৎকার করেও কাঁদতে পারেন। মোটকথা, ভেতরটা হালকা করার জন্য যা দরকার হয় তা-ই করুন।
সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিন
নিজেকে গুটিয়ে না নেওয়ার একটা চমৎকার উপায় হতে পারে সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করা। এতে করে মন হালকা হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শুনতে একটু অস্বাভাবিক লাগলেও এমন পরিস্থিতি থেকে আপনাকে বের করে আনতে পারে ব্যায়াম। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে দেখবেন মনে জন্মাবে ভালো থাকার বিশ্বাস। আপনি সব কষ্ট ভুলে হাসিখুশি থাকতে পারবেন। শুধু তাই নয়, নিয়মিত জিমে ঘাম ঝরালে শরীর ও স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে পারবেন। তাই ব্রেকআপের পর মন চাঙ্গা রাখতে নিয়মিত এক্সারসাইজ করতে ভুলবেন না যেন!
আমার বার্তা/এল/এমই