তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় / বিভাগসমুহে জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) হিসেবে সংযুক্তিতে কর্মরত ৪২ জন বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারের কর্মকর্তার সংযুক্তি আদেশ গত ৮ আগষ্ট বাতিল করে তাদের নিজ দপ্তরে যোগদানের নির্দেশনা দেওয়ায় পিআরও শুণ্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগসমুহে সাংবাদিকদের জন্য তথ্য আদান প্রদানে ব্যাপক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এ পর্যন্ত যখন সরকার পরিবর্তন /পতন হয়েছে, তখন সে সরকারের প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সচিব, মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব পরিবর্তন/বদলী হয়েছে । অথচ ইতোপূর্বে কোনো মন্ত্রণালয়ের/ বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তাকে পরিবর্তন/বদলী করা হয়নি। যদি ২/৪ জন পিআরওকে অন্যত্র বদলী করার দরকার হলে ৩/৪ মাস পরে করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এরমধ্য দিয়ে পতন হয় সরকারের। এরপর থেকেই নিয়োগ বাতিল-পদায়ন ইস্যুতে নতুন-নতুন প্রজ্ঞাপন ও আদেশ জারি হলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ হুমায়ুন কবির খোন্দকার বহাল তবিয়তে রয়েছেন। অথচ বিনা মেঘে বর্জপাতের মতো তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের নির্দেশে গত ৮ আগষ্ট তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) হিসেবে সংযুক্তিতে কর্মরত ৪২ জন কর্মকর্তার সংযুক্তি আদেশ বাতিল করে তাদের নিজ দপ্তরে যোগদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া বেতারে ফিরে যায়নি এখনো ১২ দলবাজ কর্মকর্তা। দলবাজ ও বেতার ক্যাডারের জনসংযোগ কর্মকর্তারা আবারো অন্তর্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পেতে তথ্য মন্ত্রণালয়ে তদবীর শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এসব কর্মকর্তার তালিকা প্রস্তুত করেছেন বলে জানা গেছে। এদিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তথ্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ না দিলে তারাও এবার আন্দোলনে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
তথ্য অধিদপ্তর থেকে সবগুলো মন্ত্রণালয়ে তথ্য-ক্যাডার (জনসংযোগ কর্মকর্তা) দেয়ার সক্ষমতা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বেতার ক্যাডারের যেসব কর্মকর্তারা ১০/১২ বছর মন্ত্রণালয়গুলোর জনসংযোগ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন, তারাই আবার উপদেষ্ঠাদের ডিও নিয়ে জমা দিচ্ছেন তথ্য মন্ত্রণালয়ে।
সচিবালয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তথ্য অধিদপ্তরের একাধিক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, সকল মন্ত্রণালয়ে পিআরও দেয়ার মতো যথেষ্ট অফিসার আমাদের আছে এবং আমাদের অর্গানোগ্রাম এও উল্লেখ আছে। অরগানোগ্রামে সংশ্লিষ্ট শাখার নাম মিনিস্ট্রিয়াল পাবলিসিটি। একইসাথে মন্ত্রণালয় গুলোতে জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) নিয়োগের সম্পূর্ণ এখতিয়ার পিআইডি'র। কিন্তু কোন ক্ষমতাবলে তথ্য মন্ত্রণালয় এই সংযুক্তি দেন, সেটা বোধগম্য নয়। বেতারের যারা কাজ করেন তারা প্রেস-মিনিস্ট্রিয়াল নয়। তারা গত ১৫ বছর ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজনৈতিক দল থেকে ডিও নিয়ে আমাদের তথ্য সাধারণ ক্যাডারের পদ দখল করে আছে এবং সরকারকে প্রচার বিমুখ ও প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বদ্ধপরিকর হয়ে প্রোপাগান্ডা চালানোর চেষ্টা করছেন। বেতার থেকে আগত কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তারা অফিস করছেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের -পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বেতার ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারা বেতারে ফিরে যেতে চাইছেন না।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় গত ৮ আগষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালযে/ বিভাগে কর্মরত ৪২ জন পিআরও কে ইতোপূর্বের সংযুক্তি প্রদানের আদেশ বাতিলপূর্বক নিজ নিজ দপ্তরে যোগদানের নির্দেশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব মোঃ হুমায়ুন কবির খোন্দকার বলেন, সকল মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রীরা না থাকলে পিআরওদের সেখানে কোনো কাজ থাকে না।তাই আমি তাদেরকে নিজ নিজ দপ্তরে কাজ করতে ঐ আদেশ দিয়েছি।ইতোমধ্যে ২ মন্ত্রণালয়ের চাহিদা মোতাবেক ২ জন পিআরও কে সংযুক্তি প্রদান করেছি।অন্যদেরকে ও মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী এ প্রক্রিয়ায় দেয়া হবে।
আমার বার্তা/কমল চৌধুরী/এমই