প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত আগস্টে ক্ষমতা নেওয়ার সময় তিনি বাংলাদেশকে গাজার মতোই বিধ্বস্ত অবস্থায় পান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। আজ সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখনও তিনি সেখানেই আছেন। সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ৮৪ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সাক্ষাৎকারে গার্ডিয়ানকে প্রধান উপদেষ্টা জানান, শিক্ষার্থীদের অনুরোধেই তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে রাজি হয়েছেন।
গত আগস্টে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) দেশের অপূরণীয় ক্ষতি করে গেছেন। এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ। আরেকটি গাজার মতো, তবে এতে কোনও ভবন ধ্বংস হয়নি বরং পুরো প্রতিষ্ঠান, নীতি, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ধ্বংস হয়ে গেছে।’
শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘হাসিনার শাসনামল কোনো সরকার ছিল না, ছিল দস্যুদের একটি পরিবার। সরকারপ্রধানের যেকোনো আদেশই তখন সম্পন্ন করা হতো। কেউ সমস্যা তৈরি করছে? আমরা তাদের উধাও করে দেব। নির্বাচন করতে চান? আমরা নিশ্চিত করব যে আপনি যেন সব আসনে জয়ী হন। আপনি টাকা চান? এই যে ব্যাংক থেকে এক মিলিয়ন ডলার ঋণ, যা আপনাকে কখনোই ফেরত দিতে হবে না।’
ভারতে হাসিনার আশ্রয় নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ভারত হাসিনাকে আতিথ্য দিলে তা সহ্য করা হবে। কিন্তু দেশকে আগের অবস্থায় নেওয়ার জন্য প্রচার চালাতে ভারতকে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া বিপজ্জনক। এটি দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলে।’
গার্ডিয়ান বলছে, বাংলাদেশে হাসিনার শাসনামল ছিল স্বৈরাচার, সহিংসতা এবং দুর্নীতির অভিযোগে ভরপুর। জুলাই ও আগস্ট মাসে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এর সমাপ্তি ঘটে। জাতিসংঘের মতে, ওই সময় বাংলাদেশে সরকারবিরোধী আন্দোলনে এক হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। জাতিসংঘ বলছে, ওই আন্দোলনে পুলিশের সহিংস দমনপীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শেখ হাসিনা।
আমার বার্তা/এমই