আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ১৯৭১ সালে সংগ্রাম পত্রিকাসহ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন তাদের দেশের শত্রু ও ভারতের দালাল বলতেন। এখন উনারা (জামায়াত) বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বলেন। আগে খারাপ বলে এখন বলতেছেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাদের (জামায়াতের) অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ফেনী শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জামায়াতকে অবস্থান স্পষ্ট করে ভুল স্বীকার করে একটি ব্যাখ্যা দিতে হবে। অতীতে তাদের খারাপ বলেছি, স্বাধীন বাংলাদেশের বিরোধীতা করে ভুল করেছি- এটিতো বলতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রেষ্ঠ সন্তান যেহেতু বলছেন এখন সেটি স্বীকার করতে হবে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের লোকেরা অনেক ভূমিকা রেখেছে। তারা এখন স্বাধীনতা সংগ্রামী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করবে কি করবে না তা নিয়ে আলোচনা চলছে। ক্ষমা চাইলে নির্বাচন করতে পারবে এমন কথা উঠেছে। জামায়াতের ব্যাপারে এমনভাবে মানুষ কথা বলেছে। মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার করে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে আমরা দলের মধ্যে বলেছি এটার একটা ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য। কিন্তু এ সমস্যা সামাধান না করে আমাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। জামায়াতকে তার রাজনীতিকে বিশ্লেষণ করতে হবে। তাদের সুদিন আগেও ছিল। সময় অনুযায়ী রাজনীতিকে সংস্কার করতে হয়। শেখ হাসিনাও নিজের ভুল স্বীকার করেনি। যারা এমন ভুল করবে তাদের কপালে দুঃখ আছে।
এবি পার্টির সদস্য সচিব বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়া ভুল হয়েছে এমনটি পোষণ করলে এ দেশে কারো রাজনীতি করার অধিকার নেই। এখানে জিয়াউর রহমান, মতিউর রহমান নিজামীসহ অনেকে মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু তারা তো ভারতে যায়নি। ভারতের আধিপত্যের দিন আর নাই। ইতোমধ্যেই এটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিকদল যারা এতদিন কথা বলতে পারেনি তারা এখন স্বাধীনভাবে কথা বলতেছে। ৭০ থেকে ৮০ ভাগ লোক মানসিক চাপে নেই, যা অতীতে ছিল না। যারা রাজনৈতিকভাবে ভয়ভীতিতে ছিল তাদের কাছে পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু যারা সাধারণ মানুষ তাদের জন্য পরিবর্তন হয়নি। তারা পরিবর্তন বলতে বুঝে দ্রব্যমূল্যর দাম কমানো ও দেশের স্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে আসা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কাজ করা।
সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক থেকে দেড় বছর লাগতে পারে উল্লেখ করে এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান বলেন, আমাদের অবস্থান একদম সুস্পষ্ট। আমরা সময় বলে দিয়েছি। সংস্কারের জন্য এক থেকে দেড় বছর লাগতে পারে। এ সরকার আগে স্থানীয় নির্বাচন করবে বলে শুনতে পাচ্ছি। অন্য কোনো ষড়যন্ত্র না হলে এ সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এবি পার্টি কোয়ালিশন সরকারে যাবে না। আমরা চাচ্ছি ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে তাদের নিয়ে কোয়ালিশন করা। এবি পার্টি নতুন দল, ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো এখন অবস্থান নেই। এখন ১৮০ আসনে দেওয়ার মত অবস্থান আছে।
আমার বার্তা/এমই