বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতের ওপর শ্বেতপত্র প্রস্তুতি কমিটির একটি প্রতিবেদনে শেখ হাসিনা সরকারের নজিরবিহীন দুর্নীতির বিষয়টি উন্মোচিত হয়েছে এবং দেশের আর্থিক খাতের গুরুতর অবস্থা উঠে এসেছে।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সামাজিকমাধ্যম এক্সে একটি স্ট্যাটাস এসব কথা লেখেন।
তারেক রহমান লেখেন, এই প্রতিবেদনটি একটি অন্ধকারের ছবি এঁকেছে, যা শেখ হাসিনার প্রশাসনকে একটি কিপটোক্রেসি হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যেখানে জনগণের সম্পদ সিস্টেম্যাটিকভাবে লুট করা হয়েছে।
তারেক রহমান আরও লেখেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে আনুমানিক ২৪০ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে। এই লুণ্ঠনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হিসেবে ২৯টি বড় আকারের উন্নয়ন প্রকল্প তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে ৮ বিলিয়ন ডলার বাজেট বাড়ানোর নামে অপব্যয় হয়েছে। ‘কুইক রেন্টাল’ বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর কথা বলা হয়েছিল অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সমাধান হিসেবে, কিন্তু সেগুলো প্রমাণিত হয়েছে দ্রুত মুনাফা অর্জনের কৌশল হিসেবে, যা জনগণের টাকায় করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে ব্যাংকিং খাতে গভীর তদন্ত করলে আরও ভয়াবহ বাস্তবতা সামনে আসবে।
এই প্রতিবেদন নিশ্চিত করেছে যে দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য ব্যাপক সংস্কার জরুরি মন্তব্য করে তারেক রহমান লেখেন, আমাদের দল, বিএনপি, এবং আমাদের সহযোগী দলগুলো একটি ৩১-দফা সংস্কার প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছে, যা এই সিস্টেমিক ব্যর্থতা মোকাবেলা করবে। এই প্রস্তাবনার ১৩তম পয়েন্টে কার্যকর দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি জনগণের অর্থের অপব্যয় বন্ধ করতে এবং সকল খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ ছাড়া আমাদের প্রস্তাবনার ১৫তম পয়েন্টে একটি অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই উদ্যোগটি অর্থনৈতিক শাসনে স্বচ্ছতা আনবে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করবে এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে সাহায্য করবে; যা যোগ্য এবং দায়বদ্ধ নেতাদের দ্বারা পরিচালিত হবে।
সরকারকে অবিলম্বে চুরিকৃত সম্পদ পুনরুদ্ধার এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হবে দাবি জানিয়ে বিএনপির এই কর্ণধার লেখেন, ন্যায়বিচার দ্রুত এবং কঠোরভাবে হওয়া উচিত, যাতে জনগণের সরকারে আস্থা ফিরে আসে এবং এমন কোনো অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি না ঘটে। বিএনপি একটি স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ, এবং ন্যায়ভিত্তিক ব্যবস্থা গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিবর্তনের সময় এখনই—আমাদের দেশ আর কোনোভাবেই আরও অদক্ষতার ভার নিতে পারে না।
আমার বার্তা/এমই