বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যে নেতা বিপদের সময় কর্মীদের ফেলে পালিয়ে যায়, এমন নেতা বিএনপি চায় না। তিনি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে থেকে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবেন—এমন নেতাই প্রয়োজন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সনাতন ধর্মাবলম্বী মতুয়া সম্প্রদায়ের ৫০ জন সদস্যের বিএনপিতে যোগদান উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘পরিষ্কার করে সরকার উদ্দেশে বলতে চাই, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আমরা দেখতে চাই না যে আপনারা আমাদের এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের কোনো রকম বিপদের মধ্যে ফেলেছেন বা কোনো রকম সমস্যা তৈরি করছেন। এটা আমি খুব স্পষ্টভাবে আপনাদের উদ্দেশে আজকে বলতে চাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার কাছে অনেক খবর আসে। দয়া করে এই সম্প্রদায়ের মানুষদেরকে কখনো হয়রানি করবেন না। তাঁরা আমাদের সদস্য, আমাদের ভাই, আমরা তাঁদের পাশে আছি এবং সমস্ত শক্তি নিয়ে থাকব।’
বিএনপিতে যোগদানকারী মতুয়া সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন এখন থেকে। আপনারা আমাদের বন্ধু। আমরা আপনাদের পাশে আছি।’
জুলাই অভ্যুত্থানোত্তর বাংলাদেশে সবাইকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাইরের কিছু কিছু মানুষ, কিছু দেশ, কিছু মিডিয়া (গণমাধ্যম), তারা বাংলাদেশের ব্যাপারে একটা মিথ্যা প্রচারণা করার চেষ্টা করছে। আমরা এ ধারণা পাল্টে দিতে চাই।’ অতীত স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেক রকম ভুল হয়েছে। অনেক রক্ত ঝরেছে বাংলাদেশে। অনেক বিভাজন হয়েছে। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
বিএনপি জাতীয়তাবাদী দর্শন নিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ২০১৬ সালে তিনি একটা কর্মসূচি দিয়েছিলেন, অর্থাৎ ২০৩০ সালে বাংলাদেশকে আমরা কেমন দেখতে চাই, তার ওপর তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন অনেকগুলো। তার মধ্যে একটা প্রস্তাব ছিল যে বাংলাদেশকে তিনি একটা রেইনবো স্টেট হিসেবে দেখতে চান। অর্থাৎ রংধনু একটা রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চান। রংধনু যেখানে অনেক রং থাকে একসাথে মিলে যায়।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা সোমনাথ দে, কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল, সোমেন সাহা, গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি রমেন সরকার প্রমুখ।
আমার বার্তা/এমই