
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করছে, তাদের মধ্যে আরেকটা দল আছে যে, তারা আমাদের সঙ্গে সরকারে ছিল। কিন্তু যখন সমালোচনা করে, তখন আর কি ভাবটা এই যে, তারা কোনো দিন কোনো সরকারে ছিল না, একেবারে নিরপরাধী।’
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ-জামায়াতে ইসলামী জাতির সঙ্গে বেইমানি করেছিল মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের লড়াইকে বিভ্রান্ত করার অনেক চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু তা সফল হয়নি। একবার ভাবুন, এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন যখন অত্যন্ত শক্তিশালী, সেই সময়ে জাতির সাথে বেইমানি করে দুটি রাজনৈতিক দল—আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতে ইসলামী এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে গিয়েছিল।’
বিএনপিই একমাত্র দল, যার বহুবার দীর্ঘ সময় রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেই সামর্থ্য এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা জনগণের সামনে যাব। এবং তাদের সমর্থন নিয়ে দায়িত্ব পেলে আমাদের সমস্ত অভিজ্ঞতা এবং সেই অভিজ্ঞতার মধ্যে আমরা যে ভুল করেছি, সেই ভুল যাতে আমরা সংশোধন করতে পারি, তা নিয়ে জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করব।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, একটা দেশের সবচেয়ে এক্সপেন্সিভ ইন্সট্রুমেন্ট হলো বা মেশিন হলো স্টেট মেশিন, রাষ্ট্রযন্ত্র। রাষ্ট্রযন্ত্রের চেয়ে মূল্যবান, রাষ্ট্রযন্ত্রের চেয়ে জটিল কোনো যন্ত্র কোনো দেশে নেই। আর সেই যন্ত্র পরিচালনার দায়িত্ব যারা চান, তাদের সক্ষমতা, তাদের অভিজ্ঞতা—এটা তো বিবেচনার বিষয়।
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের তালিকায় বিএনপি এবং অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদের সংখ্যা বেশি উল্লেখ করেন নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে কারা বেশি অংশগ্রহণ করেছে? সে অনুযায়ী গুরুত্ব পাওয়া উচিত না? কিন্তু আমাদের কিছু কিছু সংগঠনের, কিছু লোকের কথায় মনে হয়, তারাই সব করেছে। কথার ভেতরে মনে হয় তারাই সব করেছে আরকি। ভাই ভেতরে-ভেতরে করেছেন, কিন্তু বাহিরে আসার সাহস পাননি কেন?’
সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্লট বরাদ্দের মামলায় তাঁর (শেখ হাসিনার) নাকি ২১ বছরের সাজা হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে আইন আদালতে কোনো হস্তক্ষেপের কারও সুযোগ নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর সেখানে প্রভাব বিস্তার করার কিছু নেই। সেখানে তাঁর সাজা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আছে এবং হাসিনার গড়া আদালত, হাসিনার গড়া ট্রাইব্যুনাল—সেখানেই তাঁর বিচার হচ্ছে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে বিচার হচ্ছে, সঠিক বিচার হচ্ছে। বিচার তো শুরু হয়েছে। তাঁর (শেখ হাসিনার) এবং তাঁর দোসরদের বিচার শুরু হয়েছে। এই বিচার, এই রায় অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। অবিলম্বে কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বস্তি পাবে। এই বিচারের রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে শহীদ পরিবার স্বস্তি পাবে।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ‘৯০-এর সর্বদলীয় ও ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ।
আমার বার্তা/এমই

