সোনালি আঁশের সোনালি মানুষ,পাটের জীবনরহস্য উন্মোচনকারী বিজ্ঞান সাধক ড. মাকসুদুল আলম। পাটের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনের গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে সোনালি আঁশের সুদিন ফেরানোর স্বপ্ন দেখিয়েছেন। অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে সকল প্রতিকূলতায় জীবনজয়ী, স্বপ্ন বাস্তবায়নের জাদুকর এই বিজ্ঞানী শুধু বাংলাদেশেরই নয়, সারাবিশ্বে বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রেও অনন্য অবদান রেখেছেন।
নির্মোহ জীবনাদর্শের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী অধ্যাপক মাকসুদুল আলম শস্যের বহুমুখীকরণের ক্ষেত্রেও বিশেষ ভুমিকা রেখেছেন। বাংলাদেশের হয়ে পাট ও ছত্রাক ছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে পেঁপে, কৃত্রিম রক্ত, মালয়েশিয়ার হয়ে রাবারসহ বিভিন্ন উদ্ভিদের জীবনরহস্য উন্মোচন করেন। পাটসহ প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারে জাতিসংঘে পাস হওয়া বাংলাদেশের প্রস্তাবটি তাঁর আবিষ্কারের, অনন্য অবদানেরই স্বীকৃতি। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী ‘নেচার’-এর প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে তাঁকে ‘বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থ-বিত্তের প্রলোভন ছেড়ে দেশপ্রেমের টানে সোনার বাংলায় এসেছিলেন। সরকার থেকে ‘স্বপ্নযাত্রা’ গবেষণা প্রকল্পের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে তাঁর সর্বমোট পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা হয়েছিলো সাড়ে নয় কোটি টাকার অধিক। কিন্তু ‘বিনিময় মূল্যহীন মাতৃসেবা’ বিবেচনায় গ্রহণ না করে তাঁর প্রতিষ্ঠিত জৈব প্রযুক্তি গবেষণা কেন্দ্রে সেই টাকা দান করেন।
নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলতেন, ‘যদি স্বপ্ন দেখতে পারো, তাহলে তা তুমি করতেও পারবে। কাউকে তোমার স্বপ্ন ধ্বংস করতে দেবে না। নিজের অনুভূতিকে মর্যাদা দাও,পরিশ্রম করো। যাদের সহায়তা পাবে, সবাইকে ধন্যবাদ দাও। প্রকৃতির অজানা রহস্যের সন্ধান তুমি পাবে। স্বপ্ন দেখো, তুমি পারবেই।’
অনন্য এই দেশপ্রেমিক বিজ্ঞান সাধকের কীর্তিকথা তুলে ধরেছেন শিক্ষক,গবেষক আবদুল্লাহ আল মোহন। প্রকাশিত হয়েছে এবারের অমর একুশের বইমেলায়। প্রকাশ করেছে অন্যধারা। মূল্য: ৩০০ টাকা। বইমেলার অন্যধারার ২ নম্বর প্যাভিলিয়নে বইটি পাওয়া যাবে। রকমারি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রখ্যাত বইয়ের দোকানেও পাওয়া যাবে।