রাজধানীর নীলক্ষেতে গাউসুল আজম মার্কেটে ‘নকল ব্যালট পেপার ছাপানোর’ অভিযোগকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল-সমর্থিত পরাজিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেছেন, নীলক্ষেতে ব্যালট পেপারের ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া যাবে না, সত্য উন্মোচিত হবেই।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি এ মন্তব্য করেন। ডাকসু নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীদের অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যার পরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই পোস্ট দেন আবিদুল।
পোস্টে আবিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজ নীলক্ষেতে ব্যালট পেপারের ঘটনাকে অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে। কিন্তু আমরা বলছি, নীলক্ষেতে ব্যালট পেপারের ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়া যাবে না, সত্য উন্মোচিত হবেই। স্বচ্ছতা আদায় করা আমাদের দায়িত্ব। সবকিছু খুব দ্রুতই স্পষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।’
পোস্টে ‘মিথ্যার শক্তিতে বিভ্রান্ত না হওয়ার’ আহ্বান জানান ছাত্রদল নেতা আবিদুল।
৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময়ই ছাত্রদলসহ কয়েকটি প্যানেলের প্রার্থীরা অনিয়ম-অসংগতির অভিযোগ তোলেন। এরপর গত সোমবার অনিয়মের ১১টি অভিযোগ তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল।
পরদিন দুপুরে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে চারটি প্যানেলের পক্ষ থেকে উপাচার্যের কার্যালয়ে যান ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের ও অপরাজেয় ৭১–অদম্য ২৪ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. নাইম হাসানসহ আরও কয়েকজন প্রার্থী।
চার প্যানেলের এই ভিপি প্রার্থীসহ অন্যরা উপাচার্য কার্যালয়ে ডাকসুর অনিয়মের অভিযোগের তথ্য জানতে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে ভিপি প্রার্থী চারজনই সাংবাদিকদের বলেন, নীলক্ষেতে গাউসুল আজম মার্কেটে নির্বাচনে ব্যবহৃত ব্যালট পেপার কোন প্রেস থেকে ছাপানো হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রকাশ করেনি। অনিরাপদ ছাপাখানা থেকে ফাঁস হওয়া নকল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট কারচুপির অভিযোগ এরই মধ্যে এসেছে।
বৈঠকের পর অভিযোগের বিষয়ে আজ এক বিবৃতিতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তাতে বলা হয়, ‘ব্যালট পেপার ছাপানোর প্রতিষ্ঠানের পরিচয় গোপনীয়তা রক্ষা একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। এখানে নিশ্চিত করা যাচ্ছে যে, সমস্ত নিয়ম মেনে একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া/দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে একটি পরীক্ষিত ও দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানকে ব্যালট পেপার ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
‘দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ব্যালট পেপার ছাপানোর পরে নির্দিষ্ট পরিমাপে কার্টিং করে তা ওএমআর মেশিনে প্রি-স্ক্যানিংপূর্বক মেশিনের পাঠযোগ্যতা নিশ্চিত করে সিলগালাকৃত প্যাকেটে সরবরাহ করে। যে ওএমআর মেশিনে স্ক্যানিং করে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ সম্পন্ন করা হয়, তা নীলক্ষেতের কোনো দোকানে সম্ভব নয়। সুতরাং যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ করা হয়েছে, তাতে এটি অরক্ষিত থাকার সুযোগ নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই ব্যাখ্যার পরই ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ওই পোস্ট দেন আবিদুল।
আমার বার্তা/জেএইচ