
সরকার অনুমোদিত ট্রাভেল পাস ব্যতীরেকে অবৈধভাবে পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি করার দায়ে কেয়ারি সিন্দাবাদ নামে সেন্ট মার্টিনগামী একটি জাহাজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।
সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তৎপর থাকা জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত যাত্রা শুরুর আগ মূহুর্তে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় কেয়ারি সিন্দাবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, তিনজন পর্যটককে ১৮শ টাকা করে অবৈধভাবে ট্রাভেল পাস ছাড়া (কিউআর কোড বিহীন) সরাসরি টিকিট বিক্রির অপরাধে কেয়ারি সিন্দাবাদকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী এভাবে টিকেট বিক্রি করা যাবে না।
তিনি জানান, শুধুমাত্র কক্সবাজারের স্থানীয়রা (লোকাল) জাতীয় পরিচয়পত্র পরিদর্শন করে টিকিট ক্রয়ের মাধ্যমে ভ্রমণে যেতে পারবে এবং অন্যান্য পর্যটকদের ক্ষেত্রে সরকার অনুমোদিত ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে হবে।
প্রথমদিন হওয়ায় গ্রেপ্তার না করে মুচলেকা দিয়ে জাহাজ কর্তৃপক্ষকে সর্তক করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনোভাবেই বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড করা যাবে না। পরবর্তীতে এমনটা ঘটলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গত ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করেছে সরকার। কিন্তু নভেম্বর মাসে রাত্রিযাপনের সুযোগ না থাকায় পর্যটকরা আগ্রহ প্রকাশ করেননি।
আজ (১ ডিসেম্বর) থেকে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই মাস রাত্রিযাপন করার সুযোগ রয়েছে সেন্ট মার্টিনে, ফলে প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শুরু হয়েছে জাহাজ চলাচল।
যাত্রার ক্ষেত্রে পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
জাহাজ মালিকদের ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ৬টি জাহাজকে প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে, যাত্রীর আনুপাতিক হার বিবেচনায় আজ ৩টি জাহাজ যাচ্ছে। জোয়ার-ভাটা ও নদীর নাব্যতা বিবেচনায় প্রতিদিনের যাত্রার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, বিকেলে সেন্ট মার্টিন থেকে ছেড়ে যাওয়া জাহাজগুলো আবার কক্সবাজারের উদ্দেশে ফিরবে।
প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক অনুমতিপ্রাপ্ত জাহাজে করে সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন, প্রথমদিনে এই সংখ্যা ছিল ১১৭৪ জন।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, সেন্ট মার্টিন যাত্রায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে পলিথিন ব্যাগ ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের পণ্য পরিবহন। পানি বহন করতে পর্যটকদের মাঝে বিশেষ ধরণের পরিবেশবান্ধব বোতল (ফ্ল্যাক্স) সরবরাহ করছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
মৌসুমের প্রথম যাত্রালগ্ন পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন বদ্ধ পরিকর, এক্ষেত্রে অবশ্যই পর্যটক ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কাম্য।
পর্যটকদের নিরাপত্তা ও হয়রানি রোধে সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় সরকারের নির্দেশনা যথাযথ মানা হচ্ছে কিনা তা কঠোরভাবে তদারকি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়ন প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ।
আমার বার্তা/জেএইচ

