আফগানদের দ্রুত নিজেদের দেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান। শুক্রবার ওই নির্দেশের পর কয়েকহাজার আফগান সীমান্ত এলাকার দিকে রওনা দেয়।
গত কয়েক দশকে বিভিন্ন যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে এবং ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর বিপুল সংখ্যক আফগান নাগরিক পাকিস্তানে আশ্রয় নেন। এএফপি ও বাসস ওই তথ্য দিয়েছে।
২০২৩ সালে প্রথম শুরু হওয়া বহিষ্কার অভিযান চলতি বছরের এপ্রিলে আবার চালু করা হয়। পাকিস্তান সরকার হাজারেরও বেশি আফগান নাগরিকের আবাসন অনুমতিপত্র বাতিল করে দেয় এবং দেশ না ছাড়লে তাদের গ্রেপ্তারের হুমকি দেয়।
বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটার ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা মেহের উল্লাহ বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্ট্র দপ্তরের নির্দেশ পেয়েছি, যাতে সম্মানজনক এবং সুশৃঙ্খল উপায়ে সকল আফগানকে ফেরত পাঠাতে একটি নতুন অভিযান চালানোর কথা বলা হয়েছে।’
আফগানিস্তানের সঙ্গে বেলুচিস্তান প্রদেশের সীমান্ত রয়েছে এবং এই দুই অঞ্চলের মধ্যে দীর্ঘদিনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বিদ্যমান। চামান সীমান্ত এলাকার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হাবিব বিঙ্গালজাই জানান, শুক্রবার সেখানে প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ মানুষ ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন।
সীমান্তের অপর পাশে আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশে শরনার্থী নিবন্ধন বিভাগের প্রধান আব্দুল লতিফ হাকিমি জানান, তাঁরা শুক্রবার আফগান নাগরিকদের ফিরে আসার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানতে পেরেছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই বহিষ্কারের উদ্দেশ্য মূলত সীমান্ত অঞ্চলে জঙ্গিবাদ দমন করতে তালেবান সরকারকে চাপ দেওয়া। ২০২৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১০ লাখেরও বেশি আফগান নাগরিক পাকিস্তান ছেড়েছেন, যার মধ্যে এপ্রিল থেকে ২ লাখেরও বেশি।
নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের একাংশ আফগানদের আর আশ্রয় দিতে চান না। ওই বহিষ্কার অভিযানে ব্যাপক জনসমর্থন আছে।
আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বেলুচিস্তানে জাতিগত বিদ্রোহ এবং উত্তর-পশ্চিমে পাকিস্তানি তালেবান ও তাদের মিত্রদের সাথে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের মধ্যে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছে।
গত বছর পাকিস্তানে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে এবং সরকার প্রায়ই এসব হামলার জন্য আফগান নাগরিকদের দায়ী করে।
এছাড়া প্রতিবেশী ইরানও আফগানদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বহিষ্কার অভিযান চালাচ্ছে, যার ফলে এরইমধ্যে ১৫ লাখেরও বেশি আফগানকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
আমার বার্তা/জেএইচ