ই-পেপার শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

ক্ষমতার পালাবদল হলেও চাঁদাবাজির সংস্কৃতি অপরিবর্তিত

জামিল হোসেন
০২ আগস্ট ২০২৫, ১৪:৫৮

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ক্ষমতার পালাবদল বহুবার হয়েছে। এক সরকার গিয়েছে, আরেক সরকার এসেছে। ক্ষমতার এই পরিবর্তনে সমাজে অনেক পরিবর্তন এসেছে, নীতিমালা বদলেছে, প্রশাসনের ধরনেও পরিবর্তন দেখা গেছে। তবে কিছু নেতিবাচক দিক রয়ে গেছে আগের মতোই, যার মধ্যে চাঁদাবাজি সংস্কৃতি অন্যতম। চাঁদাবাজি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। চাঁদাবাজি একটি অপরাধমূলক কার্যকলাপ, যেখানে কোন ব্যক্তি ক্ষমতার প্রভাব ব্যবহার করে অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করে। যদিও সময়ের সাথে সাথে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন এসেছে, তবুও চাঁদাবাজি সংস্কৃতি কমেনি, বরং এটি বিভিন্ন রূপে অব্যাহত রয়েছে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: বাংলাদেশে চাঁদাবাজির সংস্কৃতি মূলত স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে শুরু হয়। ১৯৭১ সালের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি ও অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর উত্থান ঘটে। ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা ও সংঘাতের সময় চাঁদাবাজি একটি সংগঠিত অপরাধ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক নেতারা প্রায়শই স্থানীয় অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর সাথে জোট বেঁধে তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেন, এবং এর বিনিময়ে এসব গোষ্ঠীকে চাঁদাবাজির সুযোগ দেওয়া হতো।

রাজনৈতিক সংযোগ: বাংলাদেশের রাজনীতিতে চাঁদাবাজির সংস্কৃতি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতারা চাঁদাবাজি করে আদায়কৃত অর্থ দলীয় তহবিলে জমা দেন বা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেন। আবার কিছু ক্ষেত্রে অপরাধী গোষ্ঠী সরাসরি রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পায়, যা তাদেরকে আইনের ঊর্ধ্বে থাকার সুযোগ দেয়। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে চাঁদাবাজি সংস্কৃতি এতটা বিস্তৃত হতো না।

ক্ষমতার পরিবর্তন ও চাঁদাবাজি: বাংলাদেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও চাঁদাবাজি সংস্কৃতি কমেনি। এর প্রধান কারণ হল রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় আসার পর তাদের সমর্থক গোষ্ঠীগুলোর স্বার্থ রক্ষা করে। নতুন সরকার ক্ষমতায় এলে পূর্ববর্তী সরকারের সমর্থক গোষ্ঠীগুলোর চাঁদাবাজি কিছুটা কমে, কিন্তু নতুন ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক গোষ্ঠী একই পদ্ধতি অবলম্বন করে। ফলে চাঁদাবাজি সংস্কৃতি চক্রাকারে চলতে থাকে।

চাঁদাবাজির প্রভাব: চাঁদাবাজি সংস্কৃতি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় বাধা। এটি শুধু অপরাধ নয়, বরং ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে একটি বড় প্রতিবন্ধক। চাঁদাবাজি সংস্কৃতি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে নানাভাবে:

ব্যবসায়ীদের উপর চাপ: ব্যবসায়ীরা নিয়মিত চাঁদা দিতে বাধ্য হন, যা তাদের জন্য অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। এই চাঁদার টাকা পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হয়, যার ফলে সাধারণ ক্রেতাদের বেশি দাম দিতে হয়।

বিনিয়োগের পরিবেশ নষ্ট: বিদেশি বা স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা চাঁদাবাজির মতো অপরাধমূলক কার্যকলাপ দেখে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ভয় পান। এর ফলে দেশে বিনিয়োগ কমে যায়, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।

ছোট ব্যবসায়ীদের ক্ষতি : ছোট ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজির সবচেয়ে বড় শিকার। তাদের আয় কম, কিন্তু চাঁদা দিতে না পারলে তাদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

রাষ্ট্রের রাজস্ব ক্ষতি: চাঁদাবাজির মাধ্যমে আদায়কৃত টাকা রাষ্ট্রের খাতে যায় না, বরং তা অপরাধী গোষ্ঠীর পকেটে চলে যায়। এর ফলে সরকারের রাজস্ব আয় কমে যায়।

চাঁদাবাজি রোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

নিচে তাদের ভূমিকা তুলে ধরা হলো

  • চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
  • চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা
  • ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা প্রদান
  • ব্যবসায়ীদের চাঁদাবাজদের হুমকি থেকে রক্ষা করা।
  • চাঁদাবাজি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে অপরাধীদের শনাক্ত করা।
  • চাঁদাবাজির কুফল সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা।
  • প্রযুক্তির ব্যবহার: সিসি ক্যামেরা, মোবাইল ট্র্যাকিং এবং ডিজিটাল নজরদারি ব্যবস্থার মাধ্যমে চাঁদাবাজদের শনাক্ত করা।

সমাধানের উপায়: চাঁদাবাজি সংস্কৃতি রোধ করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। কারণ, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে চাঁদাবাজি সংস্কৃতি একটি জটিল ও বহুমাত্রিক সমস্যা। ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও এই চাঁদাবাজি সংস্কৃতি রোধ করা সম্ভব হয়না, কারণ এটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের সাথে গভীরভাবে জড়িত।

লেখক: জামিল হোসেন, অনলাইন নিউজ এডিটর, দৈনিক আমার বার্তা, ঢাকা।

রোহিঙ্গা নেতৃত্ব বিকাশ ও অধিকার আদায়ের সংগ্রাম

রোহিঙ্গা সংকটের শুরু মিয়ানমারে এবং মিয়ানমারেই রয়েছে এই সংকটের সমাধান। প্রায় আট বছর ধরে বাংলাদেশে

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা

ঔষধশিল্পে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এক বিস্ময়কর উন্নয়নের গল্পকথা, যা নিয়ে বাঙালী হিসেবে আমরা সকলে গর্ববোধ করি।

গত শতাব্দীর পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে

সঠিক নেতৃত্ব তৈরীর কারিগর ছিলো দেশের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ। ডাকসু, চাকসু, রাকসু, জাকসু, শাকসু,

পর্যটনই হতে পারে জাতীয় আয়ের বিশাল খাত

বাংলাদেশের অর্থনীতির বিশাল সম্ভাবনাময় খাত উঠে আসতে পারে পর্যটন শিল্প। অর্থনীতির প্রধান খাত হিসেবে গড়ে
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

লোহাগাড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির নতুন দায়িত্বে মেহেদী-জাহেদুল

কক্সবাজারে ট্রেন দুর্ঘটনার পর রেললাইন আটকে বিক্ষোভ

ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক বইমেলায় হবে প্রবাসী লেখকদের মিলন মেলা

লন্ডনে গ্রেটার কামাল বাজার ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট ইউকের নতুন কমিটি গঠন

রোববার থেকে জিএমপির সব থানায় অনলাইন জিডি চালু হচ্ছে

পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যায় আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার

রাস্তার কাজে অনিয়মের জেরে এলজিইডির কর্মচারীকে গণপিটুনি

এশিয়া কাপ দেখতে না পাওয়ার সম্ভাবনা পাকিস্তানের অধিবাসীদের

বেসরকারি লিগে ‘পাকিস্তান’ নাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি

চলতি বছরে ওমরাহ সিজনে ৪৫ দিনে ওমরাহ করলেন ১২ লাখ মানুষ

দেশের স্বার্থ বিসর্জনের কোনো সুযোগ নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা

স্থলপথে হজযাত্রা বন্ধ করতে যাচ্ছে মিসর

খুবিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন দেশি-বিদেশি তিন শতাধিক গবেষক

কক্সবাজারের রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল চারজনের

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতি পোশাক শিল্পের জন্য ইতিবাচক: ফজলে শামীম এহসান

জুলাইয়ের মায়েরা স্মরণসভায় কান্নায় ভেঙে পড়েন শহীদের মায়েরা

র‍্যাব পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত দলের আট সদস্য গ্রেপ্তার

বিএনপির পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, গ্রেফতার ৫

রাত দশটার পর হলের বাইরে থাকলে চবিতে ছাত্রীদের সিট বাতিল

সাশ্রয়ী মূল্যে চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দরের সেবা নিশ্চিত করতে হবে