যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রীয় সফরের অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য সফর করেছেন। এ সময় এআই ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দুই দেশের যুগান্তকারী বেশ কয়েকটি চুক্তি সই হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম সফর হয়েছিল ২০১৯ সালে। এবারের সফরটি জাঁকজমকপূর্ণ রাজকীয় আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে এবং এটি যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ট্রাম্পকে উইনসর ক্যাসেলে রাজা চার্লস তৃতীয় এবং রাণী ক্যামিলার পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার ও রথযাত্রাসহ রাজকীয় সম্মান দেওয়া হয়।
তিনি সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সন্ধ্যায় উইনসর ক্যাসেলের সেন্ট জর্জ হল-এ আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় উপস্থিত থেকে উভয় দেশের নেতারা ‘বিশেষ সম্পর্ক’ বজায় রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
সফর উপলক্ষে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৪২ বিলিয়ন ডলার) মূল্যের ‘টেক প্রস্পেরিটি ডিল’ স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও পারমাণবিক শক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। মাইক্রোসফট, এনভিডিয়া ও গুগলসহ প্রধান মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলি যুক্তরাজ্যে বিশাল বিনিয়োগ ঘোষণা করেছে। শুধু মাইক্রোসফটই প্রায় ২২ বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ক্লাউড ও এআই অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে।
সামগ্রিকভাবে, এই সফরের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকার দাবি করছে, মার্কিন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে মোট ১৫০ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ আশ্বাস পাওয়া গেছে, যা হাজার হাজার নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই সফরকে দুই দেশের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তবে সফরকে ঘিরে লন্ডনসহ বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবাদকারীরা ট্রাম্পের ইমিগ্রেশন নীতি, বৈদেশিক নীতি এবং জেফ্রি এপস্টেইনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে উইনসর ক্যাসেলে ট্রাম্প ও এপস্টেইনের ছবি প্রক্ষেপণসহ বিভিন্ন প্রতিবাদী কার্যক্রমও সংঘটিত হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং উইন্সর ক্যাসেলে আপত্তিকর ভিডিও প্রদর্শন সংক্রান্ত অপকর্মের অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আমার বার্তা/জেএইচ