বিমানকে দুই ভাগ করার যৌক্তিকতা দেখেন না বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কৌশল পুনঃনির্ধারণে গঠিত সরকারের টাস্কফোর্স কমিটি যে সুপারিশ দিয়েছে সেটির কোনো যৌক্তিকতা দেখছেন না।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিমানকে ‘অথর্ব’ প্রতিষ্ঠান আখ্যা দিয়ে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান করতে বিদেশি ব্যক্তি বা সংস্থার মাধ্যমে পরিচালনার প্রস্তাব আমলে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
বিমানকে দুই ভাগ করার যে প্রস্তাব বিষয়ে মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, আমি তো মনে করি যে এটার যৌক্তিকতা নেই। প্রথম কথা হল বিমানে কোনো অসুবিধা নাই। বিমানের টিকিট এখন অনলাইনে পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, বিমানের টিকেট নিয়ে এজেন্টরা আগে নানা ধরনের কিছু করেছে। এখন যেগুলো পত্রপত্রিকায় আসে, এগুলো আমাদের টিকিট না। অন্যান্য এয়ারলাইন্সের টিকিট। তারা বাল্ক দিয়ে দেয়। পরে ওরা আস্তে-আস্তে ছাড়ে বেশি পয়সা দিয়ে। আমাদের টিকিটে ওইগুলো নাই।
জনপ্রশাসন সংস্কারে তো উদ্যোগ নিয়েছেন, বিমানের সংস্কারে কি উদ্যোগ নিচ্ছেন, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই যে আজ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সি-চেক সম্পন্ন হলো, এটা আগে কোনোদিন হয়নি। বিমানের সবাই মিলে কাজ না করলে এটা হত না। যে কাজটা হল, কত কোটি টাকা সেভিংস হলো, বিমান যদি ভালোভাবে কাজ না-ই করে, কীভাবে এটা হল?
বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সক্ষমতা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিমান প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই বিমান এই কাজ করে যাচ্ছে। বাইরের থেকে কেউ আসে যদি, সে কি আমেরিকা থেকে লোক নিয়ে আসবে? আমাদের লোক দিয়েই করাবে। তো আমরা আমাদের লোক দিয়ে করাতে পারব না?
বাইরের থেকে কেউ এসে যদি বলে যে না আমি দুবাই থেকে লোক নিয়ে আসব, ইন্ডিয়া থেকে লোক নিয়ে আসব, তাহলে একটা আলাদা কথা, যোগ করেন চেয়ারম্যান।
বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা নিয়ে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর তো অভিযোগ আছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো কোনো কমপ্লেইনই করছে না। তাদের কোনো অসুবিধা হয় না, এটা অহেতুক। লাগেজ হ্যান্ডলিংয়ে কতগুলো ট্যাকটিক্যাল সমস্যা আছে। এখন যেখানে টার্মিনাল আছে, সেখানে তিনটার বেশি কনটেইনার নেওয়া যায় না। সেটা নিয়ে পৌঁছানোর পরে ব্যাক করে বের হতে হয়। যখন বেশি লাগেজ থাকে, তখন সমস্যা হয়।
তিনি বলেন, প্যাসেঞ্জার ইমিগ্রেশন করে বের হতে-হতে প্রথম লাগেজ চলে আসে। আমরা অনেক ইমপ্রুভ করেছি। লাগেজে আগে কিছু সমস্যা হত, হত না বললে ভুল হবে। এখন প্রত্যেকের বডি ক্যামেরা দেওয়া আছে, সে কি করছে, কোথায় যাচ্ছে সার্বক্ষণিক দেখা হচ্ছে। এখন আর এটা করার সুযোগ নাই। আর যদি কাউকে পাওয়া যায়, সঙ্গে সঙ্গে এখন আর জিজ্ঞাসাবাদ নাই, চাকরি খতম। যেই ধরনের প্লেন এখানে নামে, ওই ধরনের প্লেনই তো নামবে। তখন লোক বেশি দরকার হবে। আমরা লোক আরও নিচ্ছি।
বাইরের এয়ারালাইন্সগুলো বিমান কি সি-চেক সেবা দিতে পারবে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাইরের এয়ারলাইন্সগুলোকেও আমরা সি-চেক সেবা দিতে পারব। দেশের বাইরে থেকেও এয়ারক্রাফট আসলে তাদেরও আমরা সেবা দেব। আমরা এ ধরনের সার্ভিস করার পর মানুষ আস্থা পাবে।
আমার বার্তা/এমই