আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘নির্বাহী আদেশে বিদেশে যেতে হলেও আইনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই আদেশ হতে হবে। আইনের বাইরে কোনো নির্বাহী আদেশ হতে পারে না।’
আজ রোববার (১ অক্টোবর) দুপুরে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে খালেদা জিয়ার ভাইয়ের করা আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে এসেছে। এটি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিবের কাছে আছে। আমি অফিসে গিয়ে আজই মতামত পাঠিয়ে দেব।’
প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন তা সঠিক।’
নির্বাহী আদেশে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর সুযোগ আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সব কাজই আইনের মধ্যে থেকে করতে হবে। আইনের বাইরে গিয়ে করলে এটা খারাপ দৃষ্টান্ত হিসেবে সৃষ্টি হবে।’
এর আগে খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ চেয়ে তাঁর ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। তখন এ বিষয়ে মতামতের জন্য আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তাঁর সাজার রায় আসে।
দেশে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাঁকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। শর্ত দেওয়া হয়, তাঁকে দেশেই থাকতে হবে।
কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ফিরোজায় ওঠেন, এখনো তিনি সেখানেই থাকছেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে কয়েক দফায় ঢাকার বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে ব্লক, আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। এর আগে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁর ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথাও জানান চিকিৎসকেরা। এখনো খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গতকাল শুক্রবার তাঁকে কেবিন থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। এরপর আবার কেবিনে আনা হয়। গত কয়েক দিন তাঁকে বেশ কয়েকবার কেবিন থেকে সিসিইউতে নিতে হয়।
এবি/জেডআর