ঢাকার মাঠে শেষ দিকে এসে কপাল পুড়েছে বাংলাদেশের। হার এড়াতে পারেনি। তবে হংকংয়ে গিয়ে স্বাগতিকদের সঙ্গে ঠিকই একটি পয়েন্ট আদায় করে নিয়েছে তারা। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ এক গোলে পিছিয়ে ছিল। বিরতির পর ১০ জনের হংকংয়ের ওপর চড়াও হয়ে খেলে সফলও হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে রাকিব হোসেনের গোলে হংকংয়ের বিপক্ষে ১-১ সমতা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।
চার ম্যাচে বাংলাদেশের দুই পয়েন্ট। হংকংয়ের ৮। এশিয়ান কাপে খেলার আশা প্রায় শেষই বলতে হবে। যদিও গাণিতিক হিসেবে এখনও আশা বেঁচে রয়েছে! তবে সেজন্য বাকি দুই ম্যাচ জিততে হবে। পাশাপাশি অন্যদের ফলের ওপর দৃষ্টি রাখতে হবে।
মঙ্গলবার হংকংয়ের কাই তাক স্পোর্টস পার্কে ৫০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। সেখানে লাল জার্সিধারীদেরই ছিল আধিক্য। প্রতিকূল পরিবেশে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ প্রথমার্ধে ভালো করতে পারেনি।
শুরু থেকে চাপ সামলে কিছুটা লড়াই করতে থাকে বাংলাদেশ। অ্যাওয়ে ম্যাচে তিনটি পরিবর্তন রেখে একাদশ সাজান কাবরেরা। জায়ান আহমেদ, শমিত শোম ও তপু বর্মণ ছিলেন একাদশে। নেই ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, তাজউদ্দিন ও মোহাম্মদ সোহেল রানা। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও খেলেননি।
রক্ষণ সামলে বাংলাদেশ বারকয়েক প্রতিপক্ষের সীমানায় গিয়েও সুবিধা করতে পারেনি। ৫-৪-১ ছকে কিংবা তা ভেঙে মিডফিল্ড কিংবা আক্রমণে রাকিবের সঙ্গে মোরসালিন যোগ হয়েও কাজের কাজ কিছু হচ্ছিল না। বরং হংকং দেখে শুনে খেলে আক্রমণ করেছে।
২২ মিনিট বল নিয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতায় এগিয়ে যাওয়া শমিতকে পেছন থেকে জার্সি ধরে টেনে ফেলে দিয়েছিলেন হংকংয়ের এক ডিফেন্ডার। বক্সের একটু ওপর থেকে হামজার নেওয়া ফ্রিকিক রক্ষণ দেয়ালে লেগে বাইরে গেলে আর কিছু হয়নি। ৩৩ মিনিটে পেনাল্টি পায় হংকং। তারিক কাজী ফেলে দেন ফেরনান্দো পেরেরাকে। জাপানের রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে সময় নেননি। স্পটকিক থেকে ম্যাট অর গোলকিপারের বিপরীত দিক দিয়ে জাল কাঁপান।
৪৪ মিনিটে বাড়তে পারতো বিপদ। মিতুলের গ্লাভস গলে বল পেরিয়ে যাওয়ার পর এক ডিফেন্ডার দ্রুত ক্লিয়ার করেন।
বাংলাদেশও সুযোগ তৈরি করে লক্ষ্যে শট নিতে পারেনি। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে ডানদিক থেকে সাদ উদ্দিনের নিচু ক্রস ছিল। তা হেড দিয়ে শমিতের সামনে দেন হামজা, বল পোস্টের সামনে দাঁড়ানো শমিতের কাছে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে হংকংয়ের এনগান চেউক পান কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। তা না হলে গোলের ভালো সুযোগ ছিল।
বিরতির পর বাংলাদেশ গোল শোধে একটু আগ্রাসী হয়ে খেলার চেষ্টা করে। তবে শুরুর দিকে হংকং ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায়। মোরসালিনের ভুল পাস থেকে বক্সের ঠিক বাইরে ফেরনান্দো পেরেইরা চেয়েছিলেন গোলকিপারের ওপর দিয়ে বল জালে জড়াতে। কিন্তু বল চলে যায় বার ঘেঁষে।
৬৩ মিনিটে জামাল ও ফাহামিদুল বদলি হয়ে নামেন। উঠে যান জায়ান ও সোহেল রানা। তারপর পাল্টাতে থাকে দৃশ্যপট। ৫ মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে ফাহামিদুলের ডান পায়ের জোরালো শট গোলকিপার তালুবন্দি করে হংকংকে রক্ষা করেছেন। ৭৩ মিনিটে বাংলাদেশ সুবর্ণ সুযোগ হারায়। সাদ উদ্দিনের ডান প্রান্তের ক্রসে ফাহামিদুল পোস্টের একদম সামনে থেকে কিছুই করতে পারেননি। গোলকিপারের পরীক্ষা নিতে পারলে হয়তো কিছু একটা হওয়ার সুযোগ ছিল।
৭৬ মিনিটে হংকং ১০ জনের দলে পরিণত হয়। শমিতকে ফাউল করে ডাবল হলুদে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন অলিভার বেনজামিন। একটু পর মোরসালিনের জায়গায় ফয়সাল আহমেদ ফাহিম নামেন। তাতে বাংলাদেশের আক্রমণে ধার বাড়ে আরও। গোলও পায় কাবরেরার দল। ৮৪ মিনিটে রাকিব হোসেনের গোল স্বস্তি ফেরায় বাংলাদেশ শিবিরে।
ফাহিমের বাঁ প্রান্তের ক্রসে বক্সের ভিতরে ফাহামিদুলের সামনের দিকে ফেলা হেডে রাকিব দারুণ এক প্লেসিংয়ে গোল করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন। গোল করেই তাদের ডিজিটাল বোর্ডের ওপর বসে আনন্দ উদযাপন ছিল দেখার মতো।
আমার বার্তা/এমই