কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ৬ জন সাংবাদিক সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। বুধবার (২৯ জুলাই) বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় হামলাকারীরা সাংবাদিকদের ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন ও ৩টি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় আহত সাংবাদিকরা হলেন দৈনিক খোলা কাগজের কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি শাহ ইমরান, স্টার নিউজের কুমিল্লা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মারুফ, বার্তা ২৪ এর কুমিল্লা প্রতিনিধি মঈন নাসের খাঁন রাফি, আমার বার্তার রিপোর্টার হাবিবুর রহমান মুন্না, এশিয়ান টিভির কুমিল্লা প্রতিনিধি মাহফুজ আনোয়ার সৌরভ, এসএ টিভির ক্যামেরাম্যান মো. বাপ্পি।
ঘটনার পর থেকেই সাংবাদিক মহলসহ সচেতন নাগরিক সমাজ তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হামলার ছবি ও ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া এবং তার বাবা প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচারের’ প্রতিবাদে ছাত্র জনতার ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করা হয়। মিছিলটি উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরে পৌঁছালে বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ সমর্থকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায়।
আহত সাংবাদিক শাহ ইমরান বলেন, "আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম, কিন্তু আমাদের টার্গেট করেই হামলা চালানো হয়েছে।"
হামলার শিকার সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মুন্না জানান, "হামলার ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করছিলাম, এ কারণেই তারা আমাদের উপর চড়াও হয়। আমরা এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।"
মঈন নাসের খানঁ রাফি বলেন, "এই হামলা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নয়, এটি বাকস্বাধীনতা ও সত্যের ওপর আঘাত। সাংবাদিকতা কোনো অপরাধ নয়, এটি সাহসের প্রতীক।"
কুমিল্লা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ জিতু বলেন, "সাংবাদিকরা কোনো পক্ষ নন। তাদের ওপর হামলা কাপুরুষতার পরিচয়। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।"
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক বলেন, "গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।"
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, "সাংবাদিকদের উপর হামলায় কায়কোবাদ সমর্থকরা জড়িত নয়। যেই জড়িত থাকুক, আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমাদের আপত্তি নেই।"
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের উপর হামলার বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। হামলাকারীদের ছবি এবং ভিডিও আমাদের হাতে এসেছে। অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"