অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থা সিপিডির ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, নির্বাচনের আগে আগামী ৬ মাসে কোন কোন সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে– তা স্পষ্ট নয়। শুধু একটি দলিলে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করল, আর সংস্কার হয়ে গেল– বিষয়টি এমন নয়।
সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল লেকশোরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’ নামে নতুন উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক সূচনা উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
রেহমান সোবহান বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর গত ৫৪ বছরে কোনো গ্রহণেযাগ্য সংস্কার প্রক্রিয়া দেখা যায়নি। সংস্কার নিয়ে অনেক আলোচনা হয়, দলিল লিপিবদ্ধ হয় এবং বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা হয়। কিন্তু একটি গ্রহণযোগ্য ও সুনিদির্ষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয় না।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কাজের প্রক্রিয়া নিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, সরকার সংস্কারের বড় তালিকা করেছে। সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে। এগুলোর মধ্যে কোনটি নির্বাহী আদেশ জারি করে বাস্তবায়ন শুরু হবে এবং কোনটি আগামী সংসদে আইনের মাধ্যমে পাস হবে, তা সুনির্দিষ্ট করতে হবে। ঘোষণা মানেই সংস্কার নয়।
অংশীজন ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনা, মানুষের চাহিদা অনুধাবন, রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকারে থাকা, সংসদীয় কমিটির বিস্তারিত আলোচনা, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই পুরো প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ ধরনের চর্চা দেখা যাচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন সিপিডির ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান।
রেহমান সোবহান বলেন, ১৯৯১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা থাকার সময় তিনি দেশের ২৫০ জন মেধাবী ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে ২৯টি টাস্কফোর্স গঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও একটি টাস্কফোর্সের প্রধান ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে সরকারগুলো এসব টাস্কফোর্সের প্রস্তাব আমলে নেয়নি।
‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’ উদ্যোগ প্রসঙ্গে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ শুধু প্রতিবেদন তৈরি ও মনিটরিংয়ে সম্পৃক্ত থাকলে হবে না। রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজ যদি যৌথভাবে কাজ করে তাহলে ভালো ফলাফল আসতে হবে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
আমার বার্তা/এমই