রাজনীতি এবং শিল্পের সম্পর্ক দিনদিন জটিল হয়ে উঠছে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। রাজনৈতিক মতাদর্শেরই আঁচ যখন শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গনে পড়ে, তা নিয়ে আলোচনা কম হয় না। শোনা যাচ্ছে, রাজনৈতিক আপত্তির কারণে কলকাতার একটি সরকারি স্কুলে ঋত্বিক ঘটকের 'আমার লেনিন' ও 'কোমল গান্ধার'-এর প্রদর্শনী বাতিল করা হয়েছে। আর তা নিয়ে এবার শোরগোল টালিউডজুড়ে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, ‘আমার লেনিন’ ছবিটির বিষয়ে বিশেষ আপত্তি ছিল। হুমকি আসছিল এই ছবি প্রদর্শিত হলে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর হবে। এরপর ‘কোমল গান্ধার’ দেখানোর অনুমতিও আর দেওয়া হয়নি।
সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দাবি, ‘এলাকায় তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক হিসেবে পরিচিত, এমন কয়েকজন আমাকে রাস্তায় ধরে মোবাইল ফোনে একটি ফেস্টুনের ছবি দেখান। তারা জানতে চান, ‘আমার লেনিন’ ছবি দেখানো হবে কি না! আমি ঠান্ডা মাথায় তাদের সঙ্গে কথা বলি। তারপর যখন বুঝতে পারি যে, আমার প্রতিষ্ঠান বিতর্কে জড়াচ্ছে, তখন আমি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ওই সিনেমা দেখানোর অনুমতি বাতিল করে দিই।’
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পরিচালক অনীক দত্ত বলেন, ‘এভাবে প্রতিবাদ করাটা যেন নিজের অযোগ্যতাই স্বীকার করা। তাই প্রতিবাদ করতেও ইচ্ছে করে না। এটা সেই শহরের অবস্থা, যাকে শিল্প এবং সংস্কৃতির কেন্দ্র বলে দাবি করা হয়- ভাবতেই পারছি না।’
তিনি আরও জানান, একদিকে ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবির প্রিন্ট পুনরুদ্ধার হচ্ছে। অন্যদিকে ‘কোমল গান্ধার’-এর প্রদর্শন আটকে দেওয়া হচ্ছে।
অভিনেতা-রাজনীতিবিদ রুদ্রনীল ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে শিল্পের স্বাধীনতা সংকুচিত হচ্ছে। বাঙালি চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় রাজনীতির অবাধ প্রভাব পড়েছে। অভিনেতা, পরিচালক বা প্রযোজককে রাজনৈতিক গণ্ডিতে বাঁধা যায় না এটা ভুলে যাচ্ছেন রাজনীতিবিদরা। কেবলমাত্র বিরোধী মতের হলে যাকে তাকে শিকার বানানো হচ্ছে। ঋত্বিক ঘটকও বাঁচলেন না। ‘আমার লেনিন’ ছবির সঙ্গে বর্তমান রাজ্য সরকারের মতের বিরোধ আছে বলে ছবিটি দেখাতে দেওয়া হলো না।’
আমার বার্তা/জেএইচ