ক্যান্সার হলো এমন একদল রোগের সমষ্টি যার বৈশিষ্ট্য হলো অনিয়ন্ত্রিত কোষ বৃদ্ধি, যা পরবর্তীতে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি জেনেটিক মিউটেশনের ফলে উদ্ভূত হয় যা স্বাভাবিক কোষের আচরণকে ব্যাহত করে, যার ফলে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন এবং টিউমার তৈরি হয়। ক্যান্সার চিকিৎসাযোগ্য হলেও এটি সম্পূর্ণরূপে নিরাময়যোগ্য নয় এবং এর পুনরায় ফিরে আসার ঝুঁকি বেশি, তাই প্রথমেই এটি প্রতিরোধ করা গুরুত্বপূর্ণ। জীববিজ্ঞান, জেনেটিক্স এবং জৈব রসায়নের আমেরিকান অধ্যাপক টমাস এন. সেইফ্রিড ৩০ বছর ধরে ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি ক্যান্সারকে দূরে রাখার জন্য কিছু টিপস নিয়ে এসেছেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখুন
রক্তে শর্করা মাত্রা বেশি হলে তা ডায়াবেটিস এবং স্থূলতার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি করে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনিযুক্ত খাবার এবং সাদা রুটির মতো দ্রুত রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে এমন খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সম্ভাব্য ক্ষতিকর। তাই এগুলো এড়িয়ে চলুন।
২. কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ কমান
বেশ কয়েকটি চিকিৎসা গবেষণায় দেখা গেছে যে, সাদা ভাতের সঙ্গে সাদা রুটি এবং চিনিযুক্ত পানীয়ের অতিরিক্ত ব্যবহার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই খাবারগুলো গ্রহণের ফলে শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা ক্যান্সার কোষের বিস্তার ঘটায়।
৩. নিয়মিত ব্যায়াম
শারীরিক কার্যকলাপ ক্যান্সার প্রতিরোধের অন্যতম শক্তিশালী পদ্ধতি। জিমে ব্যায়াম করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। যেকোনো ধরণের হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা এমনকি গৃহস্থালির কাজও শারীরিক কার্যকলাপ হিসেবে গণ্য। লক্ষ্য হলো প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপের সংমিশ্রণ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এটি হরমোনের মাত্রা স্থিতিশীল করে। শারীরিক কার্যকলাপ কমপক্ষে ১৩টি ভিন্ন ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, যার মধ্যে স্তন ক্যান্সারের পাশাপাশি কোলন এবং এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার অন্তর্ভুক্ত।
৪. রোজা রাখা
রোজা রাখার অর্থ হলো খাবার খাওয়া থেকে নিয়মিত বিরতি নেওয়া। গবেষণায় দেখা গেছে যে, রোজা শরীরের প্রাকৃতিক মেরামত ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে, একইসঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
৫. চাপমুক্ত থাকুন
দীর্ঘমেয়াদী চাপ শরীরে একাধিক ধ্বংসাত্মক প্রভাব তৈরি করে, যা ক্যান্সারের বিকাশের কারণ হতে পারে। শরীর হরমোন নিঃসরণ করে চাপের প্রতি সাড়া দেয় যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, ধ্যান এবং প্রকৃতিতে সময় কাটানোসহ শিথিলকরণ কৌশল আপনাকে চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৬. প্রদাহ-বিরোধী খাদ্য গ্রহণ করুন
যখন শরীর ক্রমাগত প্রদাহ অনুভব করে, তখন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। প্রদাহ কমায় এমন খাবার খাওয়া শরীরের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য একটি শক্তিশালী পদ্ধতি।
আমার বার্তা/জেএইচ