
ঢাকার জলাশয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে দখল, ভরাট ও দূষণের শিকার ছিল। কিন্তু সম্প্রতি কেরানীগঞ্জের দড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৪টি জলাশয়ের সংস্কারের কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে, যা ঢাকার পরিবেশ এবং জলাধার সংরক্ষণে একটি নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। এই প্রকল্প শুধু জলাশয় পুনর্গঠনই নয়, বরং নগরবাসীর জন্য একটি সবুজ, নিরাপদ এবং জলবায়ু সহনশীল পরিবেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, "খাস পুকুর এবং জলাশয় জাতীয় সম্পদ হিসেবে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। ঢাকা মহানগরী ও জেলার ১১৩টি খাস পুকুরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৪৪টি জলাশয় সংস্কারের জন্য চিহ্নিত হয়েছে।"
এই প্রকল্পের আওতায় জলাশয়গুলোর সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, পুনঃখনন, পাড় বাঁধাই, দূষণমুক্তকরণ, পানি প্রতিস্থাপন, বাঁধানো ঘাট, ওয়াকওয়ে ও বেঞ্চ স্থাপন, এবং বৃক্ষরোপণের কাজ করা হবে। এর ফলে জলাবদ্ধতা কমে আসবে, বৃষ্টির পানি ধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, মৎস্যচাষ, কৃষি কার্যক্রম এবং নগরবাসীর জন্য পরিবেশবান্ধব বিনোদনকেন্দ্র তৈরির সুযোগ তৈরি হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, "জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ অপরিহার্য। জেলা পর্যায়ে সব জলাশয় সংস্কৃত হলে নগরের পানি ভারসাম্য রক্ষা হবে এবং একটি টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত হবে।"
তিনি স্থানীয় জনগণ, মৎস্যজীবী সম্প্রদায় এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষকে প্রকল্প বাস্তবায়নে যুক্ত করার গুরুত্বও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "পলিথিন দূষণ প্রতিরোধে নাগরিক সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের নজরদারি এবং জনসচেতনতার কারণে বর্তমানে সুপারশপগুলোতে পলিথিন ব্যবহার কমানো হয়েছে।"
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ, পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিনাত ফৌজিয়া।
উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কাজ শুরু করার নির্দেশনা দেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই প্রকল্পের বাস্তবায়নে ঢাকার জলাধার স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা ফিরে আসবে এবং জলবায়ু সহনশীল নগর ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আমার বার্তা/জেএইচ

